প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২১, ২১:৩৫
হাজীগঞ্জে ছাত্রদল নেতা ছায়েম নিজ বাসায় হামলার শিকার
হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আবু সায়েম মিয়াজী গত ৪ জুলাই হাজীগঞ্জের মকিমাবাদের ভাড়া বাসায় হামলার শিকার হয়েছেন। এ সময় তার স্ত্রী একই হামলার শিকার হয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। যাদেরকে তিনি রাজনীতি শিখিয়েছেন তারাই ঠুকনো একটি বিষয় নিয়ে এমন ন্যাক্কারজনক কান্ড ঘটায় বলে আবু ছায়েম মিয়াজী চাঁদপুর কন্ঠকে মুঠোফোনে জানান।
নিজ দলীয় এক ছাত্রেনতার ফেইজবুকে স্ট্যাটার্সের নিচে কমেন্স করাকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে অনেক সোরগোল চলতে দেখা গেছে। এছাড়া তিনি বর্তমানে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক ও উপজেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক।
জানা যায়, সামছুদ্দীন খান নুর নামে ছাত্রদলের এক নেতা তার নিজের ফেইসবুকে রাজনীতি প্রসঙ্গ নিয়ে একটি স্ট্যাটার্স পোস্ট করেন। সেই পোস্টে কমেন্টস্ করেন আবু সায়েম মিয়াজী। এ ঘটনার সূত্র ধরে ৪ জুলাই রাতে নিজ দলীয় কয়েকজন যুবক তার ভাড়া বাসায় হামলা চালায়। ঘটনার পরপরই আবু সায়েম মিয়াজীর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়।
নিজ দলীয় কিছু যুবক আর যাদেরকে তিনি রাজনীতি শিখিয়েছেন তারাই আজ তার বাসায় গিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে চাঁদপুর কন্ঠকে জানান। তবে হামলাকারী সবাই তার দলীয় লোক ও তাদেরকে চিনতে পারলে ও অজ্ঞাত কারণে তাদেন নাম বলতে রাজি হননি আবু ছায়েম মিয়াজি। এ বিষয়ে তিনি সাধারণ ডায়েরি করবেন বলে চাঁদপুর কন্ঠকে জানিয়েছেন।
এদিকে গত বুধবার দিনের বেলায় আবু ছায়েম মিয়াজী তার নিজের ফেইজবুকে একটি স্ট্যাটার্স দেন। ঐ স্ট্যাটার্সটি দেয়ার ৯ ঘন্টার মধ্যে ৯৯ জন কমেন্স করলেও পরে আর স্ট্যাটার্সটি আবু ছায়েম মিয়াজী ফেইজবুকে দেখা যায়নি।
স্ট্যাটার্সটি নিচে হবহু তুলে ধরা হলো "আমার ঘটনা নিয়ে কেউ কোন কথা না বললে ভালো বলে আমি মনে করি। আমরা সবাই বিএনপি পরিবারের সন্তান,সবার প্রতি অনুরোধ রইলো কাউকে ছোট করবেন না সবাই আমরা দলের ভাই। সবাই মিলে মিশে দলকে কিভাবে শক্তিশালী করা যায় সেই চিন্তা সবাই করেন,এই কামনা করি। ধন্যবাদ সবাই।"
এদিকে বাবু সর্দার নামে আরেক সাবেক ছাত্রনেতা তার ফেইজবুকে ষ্ট্যাটার্সে লিখেছেন "আবু সায়েম নিয়াজীকে মারা পিছনে ২ জন যুবক নেতাদের হাত আছে।"
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু ছায়েম মিয়াজীর এক মাত্র ছেলে গত বছর পানিতে ডুবে মারা যায়। সেই ঘটনার পর থেকে তার স্ত্রী সবসময় অসুস্থ থাকেন। এরই মধ্যে এমন ঘটনায় হতবিহবল হয়ে পড়েন এই গৃহিনী।
উল্লেখ্য চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী আসনের মধ্যে বিশেষ করে হাজীগঞ্জের বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে স্পষ্টত দু’ ভাবে বিভক্ত। এর মধ্যে এক অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপি'র সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য লায়ন ইঞ্জিনিয়ার মমিনূল হক। তিনিই মূলত: দলের এই দূর্দিনে দলকে অর্থ আর শ্রম দিয়ে স্থানীয় বিএনপিকে চাঙ্গা রেখেছেন। হাজীগঞ্জে বিএনপির আরেক অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক ও প্রয়াত ৪ বারের সংসদ সদস্য, এম এ মতিন। তার মৃত্যুর পর এ গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক, সাবেক সভাপতি ড. মো. আলমগীর কবির পাটওয়ারী। আবু ছায়েম মিয়াজী লায়ন ইঞ্জিনিয়ার মমিনূল হকের বিশ্বস্থ কর্মী হিসেবে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন।